Joynal's House
 Blog
Main » 2013 » June » 18 » আমার কাজে লাগবে এমন কিছু কু’রআনে আছে কি?
7:45:16 PM
আমার কাজে লাগবে এমন কিছু কু’রআনে আছে কি?

কুরআন সম্পর্কে একটি প্রচলিত ধারণা হল এটি একটি উচ্চ মর্গের ধর্মীয়, নৈতিক, ঐতিহাসিক বই, যাতে মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় বড়, জটিল ব্যপারগুলোই শুধুমাত্র বলা আছে। দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগে এমন সাধারণ ব্যপারগুলোর জন্য কুরআন নয়। যেমন আমরা কিভাবে কথা বলব, কিভাবে বেড়াতে যাবো, কি ধরণের কাপড় পড়ব এসব খুঁটিনাটি ব্যপারের জন্য কুরআন নয়। এই ধারণার কারণে অনেকেই কুরআন থেকে না শিখে আনুষঙ্গিক ধর্মীয় বই, মনীষীর জীবনী ইত্যাদি পড়ে নানা ধরণের বিতর্কিত উপদেশ শিখে বিভ্রান্ত হয়ে নিজের, পরিবারের, সমাজের ক্ষতি ডেকে আনে; যেখানে কিনা স্বয়ং আল্লাহ আমাদেরকে শিখিয়েছেনঃ

  • কথা বলার সময় সবচেয়ে মার্জিত শব্দ ব্যবহার করবে এবং সবচেয়ে সুন্দর ভাবে কথা বলবে ২:৮৩।
  • কোন ভণিতা না করে, ধোঁকা না দিয়ে, যা বলতে চাও পরিস্কার করে বলবে ৩৩:৭০।
  • চিৎকার করবে না, কর্কশ ভাবে কথা বলবে না, নম্র ভাবে কথা বলবে ৩১:১৯।
  • মনের মধ্যে যা আছে সেটাই মুখে বলবে ৩:১৬৭।
  • ফালতু কথা বলবে না এবং অন্যের ফালতু কথা শুনবে না। যারা ফালতু কথা বলে, অপ্রয়োজনীয় কাজ করে সময় নষ্ট করে তাদের কাছ থেকে সরে যাবে – ২৩:৩, ২৮:৫৫।
  • কাউকে নিয়ে উপহাস করবে না, টিটকারি দিবে না, ব্যঙ্গ করবে না – ৪৯:১০।
  • অন্যকে নিয়ে খারাপ কথা বলবে না, কারো মানহানি করবে না – ৪৯:১০।
  • কাউকে কোন বাজে নামে ডাকবে না। – ৪৯:১০।
  • কারো পিছনে বাজে কথা বলবে না – ৪৯:১২।
  • যাদেরকে আল্লাহ বেশি দিয়েছেন, তাদেরকে হিংসা করবে না, সে যদি তোমার নিজের ভাই-বোনও হয় – ৪:৫৪।
  • অন্যকে কিছু সংশোধন করতে বলার আগে অবশ্যই তা নিজে মানবে। কথার চেয়ে কাজের প্রভাব বেশি – ২:৪৪।
  • কখনও মিথ্যা কথা বলবে না – ২২:৩০।
  • সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঘোলা করবে না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করবে না – ২:৪২।
  • যদি কোন ব্যপারে তোমার সঠিক জ্ঞান না থাকে, তাহলে সে ব্যপারে মুখ বন্ধ রাখো। তোমার মনে হতে পারে এসব সামান্য ব্যপারে সঠিকভাবে না জেনে কথা বললে অত সমস্যা নেই। কিন্তু তুমি জানো না সেটা হয়ত আল্লাহর কাছে কোন ভয়ঙ্কর ব্যপার – ২৪:১৪, ২৪:১৬।
  • মানুষকে অত্যন্ত বিচক্ষণভাবে, মার্জিত কথা বলে  আল্লাহর পথে ডাকবে। তাদের সাথে অত্যন্ত ভদ্র, শালীনভাবে যুক্তি তর্ক করবে – ১৬:১২৫।

ব্যবহার

  • মার্জিত পোশাক পড়বে, সুন্দর আচরণ করবে – ৭:২৬।
  • মার্জিত পোশাক পরে প্রার্থনা করবে, সেটা যেখানেই হোক না কেন – ৭:৩১।
  • দরকারের বেশি খাবার খাবে না, পান করবে না – ৭:৩১।
  • নিজেই নিজের গুণ জাহির করে অন্যকে মুগ্ধ করার চেষ্টা করবে না – ৫৩:৩২।
  • কারো সাথে ফুটানি করবে না, নিজেকে নিয়ে গর্ব করবে না– ৩১:১৮।
  • দেমাক দেখিয়ে চলা ফেরা করবে না – ১৭:৩৭।
  • তাড়াহুড়া করবে না, ধীরে সুস্থে চলাফেরা করবে – ৩১:১৯।
  • বিনয়ের সাথে চলাফেরা করবে – ২৫:৬৩।
  • বেশি সন্দেহ করবে না, কিছু সন্দেহ আছে যেটা করা গুনাহ। আন্দাজে ঢিল মারবে না। একে অন্যের উপর গুপ্তচরগিরি করবে না – ৪৯:১২।
  • কাউকে জিজ্ঞেস না করে এবং সুন্দর সম্ভাষণ না জানিয়ে তার ঘরে কখনও ঢুকে পরবে না – ২৪:২৭।
  • কারো সাথে দেখা হলে তাকে সুন্দরভাবে সম্ভাষণ জানাবে, সালাম দিবে। কেউ তোমাকে সম্ভাষণ জানালে তাকে তার থেকে আরও ভালভাবে সম্ভাষণ জানাবে, সালাম দিবে। যদি সেটা না পারো, অন্তত সে যেভাবে জানিয়েছে, সেভাবে জানাবে – ৪:৮৬।
  • যখন তুমি নিজের ঘরে আসবে বা অন্য কারো ঘরে যাবে, ঘরে যারা আছে তাদেরকে সুন্দর সম্ভাষণ জানাবে এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে কল্যাণ কামনা করবে – ২৪:৬১।
  • কেউ ভুলে দোষ করে ক্ষমা চেলে এবং নিজেকে সংশোধন করলে তাকে আগ্রহ নিয়ে, কোন রাগ চেপে না রেখে ক্ষমা করে দিবে – ৬:৫৪, ৩:১৩৪।
  • অজ্ঞ, বর্বর, বিপথগামী লোকজন অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা, খামোখা যুক্তিতর্ক করতে গেলে তাদেরকে সালাম/শান্তি বলে সরে যাবে– ২৫:৬৩।

নৈতিকতা

  • নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে আগে ঠিক কর, অন্যদেরকে ঠিক করার আগে – ৬৬:৬।
  • কারো কোন উপকার করলে তা তাকে বার বার মনে করিয়ে দিয়ে কষ্ট দিবে না – ২:২৬২।
  • কারো উপকার করলে তার বিনিময়ে তার কাছ থেকে কোন উপকার, এমনকি ধন্যবাদও আশা করবে না – ৭৬:৯।
  • কাউকে কথা দিলে অবশ্যই কথা রাখবে। তোমার প্রত্যেকটা অঙ্গীকারের ব্যপারে তোমাকে জিজ্ঞেস করা হবে – ১৭:৩৪।
  • যারা ভালো কাজ করছে তাদেরকে ভালো কাজে সাহায্য করবে, উৎসাহ দিবে, তাদের সাথে ভালো কাজে যোগ দিবে। যারা খারাপ কাজ করে তাদেরকে কোন ধরণের সাহায্য করবে না – ৫:২।
  • যারা ফাজলেমি, ছ্যাবলামি করে তাদের কাছ থেকে নিজের মান বজায় থাকতে সরে যাবে – ২৫:৭২।
  • নোংরামি, অশ্লীল কাজের ধারে কাছেও যাবে না, সেটা গোপনে হোক আর প্রকাশ্যে – ৬:১৫১।
  • বিপরীত লিঙ্গের প্রতি দৃষ্টি নত রাখো, কাম দৃষ্টি নিয়ে তাকাবে না, একপলকের জন্যও নয় – ২৪:৩০, ২৪:৩১, ৪০:১৯।
  • কারো সম্পর্কে খারাপ কিছু শুনলে তার সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখো যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি তার সম্পর্কে সঠিক তথ্য না পাচ্ছ। অন্যদেরকে নির্দোষ হিসেবে নিবে যতক্ষণ না তার দোষ প্রমাণিত হয় – ২৪:১২।
  • দুষ্ট, পাজি কেউ তোমাকে কোন খবর দিলে সেটা ভালো করে যাচাই করে নিশ্চিত হও যাতে করে তুমি এমন কিছু করে না ফেল যার জন্য তোমাকে পরে পস্তাতে হয় – ৪৯:৬।
  • তোমার যা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান নেই তা অন্ধ অনুসরণ করবে না কারণ আল্লাহর আদালতে তোমার দৃষ্টি, শ্রবণ এবং বিচার-বুদ্ধি এই সব কিছুর বিচার করা হবে – ১৭:৩৬।
  • যারা আল্লাহর বাণীকে গুরুত্ব দেয় না, তা নিয়ে অবহেলা করে, হাসি ঠাট্টা করে তাদের কাছ থেকে সরে যাবে – ৬:৭০। যতক্ষণ না তারা অন্য প্রসঙ্গে কথা না বলে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সাথে বসবে না, যাতে করে তুমিও তাদের মত হয়ে না যাও – ৪:১৪০।
  • পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে – ৯:১০৮, ৪:৪৩, ৫:৬।
  • ঘুষ খাবে না এবং ঘুষ দিবে না – ২:১৮৮।
  • অন্যের টাকা-পয়সা, সম্পত্তি জেনে শুনে অন্যায় ভাবে দখল করবে না – ২:১৮৮।
  • নিজের সম্পত্তি অন্যায় ভাবে ভোগ করবে না – ২:১৮৮।
  • অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, সংস্থানের জন্য যাদের আনুগত্য করছ তাদের কোন ক্ষমতাই নেই তোমাকে কিছু দেবার, শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে চাও– ২৯:১৭।

পারিবারিক ও আত্মীয় সম্পর্ক

  • খাবারের দাওয়াত পেলে যখন যেতে বলেছে, তখনই যাবে, বেশি আগে যাবে না। খাওয়া হয়ে গেলে দেরি না করে চলে আসবে, যাতে তাদের অসুবিধা না হয় – ৩৩:৫৩।
  • কথা বলার সময় কারও পক্ষপাতিত্ব করবে না, সেটা যদি নিকট আত্মীয়ের বিরুদ্ধেও হয় – ৬:১৫২।
  • বাবা-মার সাথে সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক রাখবে, ব্যবহার করবে – ৪:৩৬।
  • কাছের আত্মীয়দের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখবে – ৪:৩৬।
  • এতিম, এবং অভাবী মানুষদেরকে সাহায্য করবে – ৪:৩৬।
  • বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের সাথে সুন্দর সম্পর্ক রাখবে – ৪:৩৬।
  • বিপদে পড়া পথিক-যাত্রীদেরকে সাহায্য করবে – ৪:৩৬।
  • যারা তোমার অধীনে কাজ করে এবং দাস-দাসি বা কাজের লোকদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করবে – ৪:৩৬।

সাম্য

  • জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, যোগ্যতা নির্বিশেষে সব মানুষকে সন্মান কর – ১৭:৭০।
  • জাতি, বর্ণ, ভাষা, যোগ্যতা নির্বিশেষে বিশ্বাসীরা সবাই ভাই-ভাই, বোন-বোন। তোমরা সবাই একই পরিবারের সদস্যর মত একে অন্যের ভাই-বোন হিসেবে থাকবে – ৪৯:১০।
  • তোমাদের জীবনে অন্যের জন্য জায়গা রাখবে– ৫৮:১১।

কু’রআনের একটি আয়াত দিয়ে শেষ করিঃ

… আমরা তোমাকে (মুহম্মদ) কিতাবটি পাঠিয়েছি সব কিছু পরিস্কার করে বর্ণনা করে; যারা আল্লাহর প্রতি অনুগত (মুসলিম) তাদের জন্য পথ প্রদর্শক, অনুগ্রহ ও সুসংবাদ হিসেবে। (১৬:৮৯)

সালাম।
বিঃদ্রঃ উপরের উপদেশ গুলো সংশ্লিষ্ট আয়াতের সরাসরি অনুবাদ নয়। বরং যেই আয়াতগুলোর অংশ বিশেষ থেকে উপদেশগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে, তা দেওয়া হয়েছে। অনেক সময় আয়াতের অর্থ পড়ে সরাসরি বোঝা যায় না উপদেশটার সাথে মিল কোথায়। চিন্তা করুন, তাফসির পড়ুন, বুঝতে পারবেন। সংগ্রহ / সুত্রঃ ওমর আল জাবির এর ওয়েবসাইট

 

Category: Documents | Views: 1043 | Added by: Joy | Rating: 0.0/0
Total comments: 0
Only registered users can add comments.
[ Registration | Login ]
Saturday, 27-Apr-2024, 1:39:35 AM
Welcome Guest
Main | Registration | Login
Clock
ABC Radio News
ABC Radio
Visitor Counter
Category
Hardware [0]
Software [2]
Mobileo [5]
Philosophy [0]
Documents [1]
Internet [2]
Tips & Tricks [2]
Science & Technology [1]
Programming [0]
Report [2]
Jokes [0]
Web-Development [0]
Online Income [0]
Bangla Font

Statistic

Total online: 1
Guests: 1
Users: 0
Joynal's Login
Calendar
«  June 2013  »
SuMoTuWeThFrSa
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30


Copyright Reserved To- JOYNAL ABEDEEN,  Mobile: 01829-366558